WB & IMF দিচ্ছে ১৮০ কোটি ডলার ঋণ

শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৩

বিশ্বব্যাংক আইএমএফ দিচ্ছে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ
ওয়াশিংটনে বৈঠকে প্রতিশ্রুতি
আগামীতে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা (১৮০ কোটি মার্কিন ডলার) ঋণের অঙ্গীকার পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সম্মেলন থেকে এ অঙ্কের ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব আবুল কালাম আজাদ। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য আবুল কালাম আজাদ ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় রবিবার সন্ধ্যায় সংবাদ মাধ্যমকে এ  তথ্য জানিয়েছেন। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাংকের চলমান প্রকল্পের গতি আনতে সম্প্রতি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। গতিহীন প্রকল্পগুলো গতি ফিরে পেলে বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, চলতি অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৫০ কোটি ডলার, উপকূলীয় সুরক্ষা খাতে ৪০ কোটি ডলার এবং বিদ্যুত উন্নয়ন খাতে ৫০ কোটি ডলার দেয়ার অঙ্গীকার করেছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ।
এ ছাড়া আরও কয়েকটি প্রকল্পে তারা ৪০ কোটি ডলার দেবে। নির্বাচনের বছরে বাংলাদেশ সহজ শর্তে এই ঋণ পাবে।
রবিরার আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন ল্যাগাড্রের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। ক্রিস্টিন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রশংসা করেন এবং এই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমানও ওই বৈঠকে অংশ নেন বলে জানা গেছে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফিলিপ লি হোয়েরোর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বাংলাদেশে চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে কথা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের জীবন মানের উন্নয়নে বিশ্ব ব্যাংকের অব্যাহত সহায়তার জন্য অর্থমন্ত্রী তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, অনেকেই বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।  অর্থমন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে।
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে গত ৯ অক্টোবর অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটনে পৌঁছায়।
অন্যদিকে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ও সহযোগিতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর গতি বাড়ছে। এ লক্ষ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে করেছে। বৈঠকে যেসব প্রকল্পের বাস্তবায়নের গতি কাক্সিক্ষত নয় সেসব প্রকল্পের সমস্যা খুঁজে বের করে তা সমাধান করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে ফলাফল এবং মনিটরিংয়ের ওপর আগের চেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর সরকারকে গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক।
সম্প্রতি পদ্মা সেতুর প্রতিশ্রুতি ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অন্য প্রকল্পে দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে কয়েকদিন আগে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি হ্রাস করতে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ ও উন্নয়নে বড় ধরনের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির পক্ষ থেকে দেয়া এ ঋণ সহায়তার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। পদ্মা সেতুতে ঋণের অর্থ প্রত্যাহারের পর সংস্থাটির পক্ষ থেকে উন্নয়ন খাতে বড় ধরনের ঋণ এটি। এ বিষয়ে সরকার ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মধ্যেই সংস্থাটির ছাড় করা অর্থে উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবঁধা উন্নয়ন কর্মসূচী শুরু করবে সরকার। এ ঋণ সহায়তার মধ্যে ২০৫ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে পাচ্ছে বাংলাদেশ।


Leave a comment...

You need to login before submit comment. | Check the box to save Password (Uncheck if on a shared computer)